ছোলার ছাতুর পুষ্টিগুণ - Cholar Chatur Pustigun ?

ছোলার ছাতুর পুষ্টিগুণ

ছোলার ছাতুর পুষ্টিগুণ ?

ছোলার ছাতু, যা বেসন নামেও পরিচিত, হলো ছোলা বা বুটের ডাল থেকে তৈরি এক ধরণের গুঁড়া। এটি বাংলাদেশী, ভারতীয় এবং অন্যান্য দক্ষিণ এশীয় রান্নাঘরে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। ছোলার ছাতু বিভিন্ন ধরণের খাবার প্রস্তুতি, যেমন পাকোড়া, বড়ি, এবং বিভিন্ন ধরণের স্ন্যাক্স তৈরিতে কাজে লাগে। এর পুষ্টিগুণ নিম্নরূপ:

Cholar Chatur Pustigun? 

  1. উচ্চ প্রোটিন সামগ্রী: ছোলার ছাতু প্রোটিনের একটি ভালো উৎস। প্রোটিন শরীরের পেশী গঠন, কোষ মেরামত, এবং এনজাইম ও হরমোন তৈরিতে অপরিহার্য।
  2. ফাইবার: ছোলার ছাতু আঁশ (ফাইবার) সমৃদ্ধ, যা হজম প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে এবং কোলেস্টেরল কমাতে সহায়ক হতে পারে।
  3. কম চর্বি: ছোলার ছাতুতে খুব কম চর্বি থাকে, যা এটিকে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য উপযোগী করে তোলে।
  4. ভিটামিন ও খনিজ: এতে ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, ফসফরাস, এবং অন্যান্য খনিজ উপাদান থাকে যা সার্বিক স্বাস্থ্যের জন্য জরুরি।
  5. লো গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (Low Glycemic Index): ছোলার ছাতুর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হওয়ায়, এটি রক্তের সুগার ধীরে ধীরে বাড়ায়, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী।
  6. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট: ছোলার ছাতু বিভিন্ন ধরণের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যৌগ ধারণ করে, যা কোষের ক্ষতি রোধ করে এবং রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।

ছোলার ছাতুর আরও কিছু উপকারিতা ও ব্যবহারের দিক রয়েছে।

ছোলার ছাতুর অতিরিক্ত পুষ্টিগুণ

ছোলার ছাতুর অতিরিক্ত পুষ্টিগুণ ও ব্যবহারগুলো নিম্নরূপে বিস্তারিত আলোচনা করা যেতে পারে।

  1. হার্ট হেলথ: ছোলার ছাতুর উচ্চ ফাইবার সামগ্রী হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক। ফাইবার রক্তের কোলেস্টেরল মাত্রা হ্রাস করে, যা ধমনীতে প্লাক জমাট বাঁধা প্রতিরোধ করে।
  2. ওজন হ্রাস ও ব্যবস্থাপনা: ছোলার ছাতু খুব কম ক্যালোরি সামগ্রী নিয়ে আসে কিন্তু উচ্চ প্রোটিন ও ফাইবারে পরিপূর্ণ, যা দীর্ঘসময় পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে এবং অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমায়।
  3. ডায়াবেটিস ম্যানেজমেন্ট: কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের কারণে, ছোলার ছাতু রক্তে সুগারের মাত্রা আস্তে আস্তে বাড়ায়, যা ইনসুলিনের স্পাইকস এবং ড্রপস এড়াতে সাহায্য করে।
  4. শক্তির উৎস: ছোলার ছাতু জটিল কার্বোহাইড্রেটের ভালো উৎস যা দীর্ঘস্থায়ী এনার্জি প্রদান করে।
  5. অ্যালার্জি এবং গ্লুটেন মুক্ত: যারা গ্লুটেন সহ্য করতে পারে না বা সিলিয়াক রোগে ভুগছে, তাদের জন্য ছোলার ছাতু একটি নিরাপদ বিকল্প।
  6. ছোলার ছাতুর ব্যবহার
  7. পাকোড়া ও স্ন্যাক্স: ছোলার ছাতু দিয়ে পাকোড়া, ভাজা বা অন্যান্য ধরনের স্ন্যাক্স তৈরি করা যায় যা খুবই জনপ্রিয়।
  8. বেকিংয়ের বিকল্প: নিরামিষ বা গ্লুটেন-মুক্ত বেকিং প্রক্রিয়ায় ছোলার ছাতু ময়দার বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
  9. গাঢ় সস তৈরি: ছোলার ছাতু বিভিন্ন ধরনের সস গাঢ় করার জন্য ব্যবহার করা হয়।
  10. শাকসব্জি এবং স্যুপে: এটি শাকসব্জি ও স্যুপের রেসিপিতে ব্যবহার করা হয়, যেমন বিভিন্ন স্যুপের ঘনত্ব বাড়ানোর জন্য। 

ছোলার ছাতুর সাবধানতা

  • ফ্ল্যাটুলেন্স: ছোলার ছাতুর উচ্চ ফাইবার সামগ্রী কিছু মানুষের ক্ষেত্রে গ্যাস বা ফ্ল্যাটুলেন্স সৃষ্টি করতে পারে। এর প্রতিকার হিসেবে ধীরে ধীরে খাদ্যতালিকায় ছোলার ছাতু যোগ করা ভালো।
  • অ্যালার্জি: যারা ছোলা বা লেগুমে অ্যালার্জিক, তাদের এটি এড়িয়ে চলা উচিত।

ছোলার ছাতুর এই পুষ্টিগুণ ও ব্যবহার এটিকে একটি বহুমুখী এবং পুষ্টিকর খাদ্য উপাদান হিসেবে পরিচিত করে।এসব পুষ্টিগুণের ফলে ছোলার ছাতু স্বাস্থ্যকর খাদ্য হিসাবে গণ্য হয় এবং এটি নিয়মিত ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করা বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য উপকার বয়ে আনতে পারে।

Next Post Previous Post